গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় ।gastric problem solution

 

গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুগণ কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি। আজকে আপনাদের মাঝে নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজকের আর্টিকেল হচ্ছে কিভাবে আপনারা আপনাদের গ্যাস্ট্রিক দূর করবেন। বা বলতে পারেন গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়। 

আশা করি আজকের আর্টিকেল পুরোপুরি দেখলে অবশ্যই আপনারা এর সমাধান পেয়ে যাবেন। আপনাদের যাদের যাদের গ্যাস্ট্রিকের বেশি সমস্যা তারা আজকের এই আর্টিকেলটি ফলো করতে পারে। এতোটুকু কথা দিতে পারে আপনারা একটু হলেও উপকৃত হবেন। তাহলে চলেন আরটিকেল শুরু করা যাক। 

কেন এই সমস্যাটা হয় 

বুক জ্বালাপোরার পাশাপাশি মুখে টকটক লাগতে পারে। পেট ফাঁপা লাগতে পারে। তুমি আসতে পারে। এবং বারবার ডেকুস আসতে পারে । আবার কারো কারো বারবার কাশিবা হেঁচকি আসে। কন্ঠ কর্কশ হয়ে যায় শ্বাসে দুর্গন্ধ আসে ।

কেন গ্যাস্ট্রিক হয় সেটার দিক শুরু করি। 

  • আমরা যা কিছু খাই সেই খাবার গুলো একবারে পাকস্থলীতে যায়। পাকস্থলী কিছু এসিড থাকে এবং আরো কিছু জিনিস তৈরি করে দেয় খাবার হজম করে। এসিড আর খাবার দুটোই পাকস্থলী দিয়ে নিচের দিকে নামতে থাকে। তবে যদি এসিড নিচের দিকে না নামে গলার দিকে উঠে আসে। তখন আমরা বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব করি।
  • তাহলে পাকস্থলীর এসিড কেন উপরের দিকে চলে আসে নিচের দিকে না নেমে। কোন কারণ ছাড়াই এমন হতে পারে। আবার কিছু কিছু জিনিস এর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং বাড়িয়ে দিতে পারে। যেমন নির্দিষ্ট কিছু খাবার। কারো কারো বেশি মসলা দিয়ে খাবার খেলে বুকে জ্বালাপোড়া করে। আবার কারো কফি খেলে অসুবিধা শুরু হয়। একেকজনের একেক রকম হতে পারে। যারা ধূমপান করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। যদি অনেক টেনশনে থাকেন সেখান থেকে হতে পারে।
  • আপনার ওজন যদি স্বাভাবিক অবস্থায় চেয়ে বেশি হয় সেই ক্ষেত্রেই সমস্যা হতে পারে। যারা গর্ভবতী তারা প্রায়ই এই সমস্যায় ভুগেন। যাদের হায়াটাস হার্নিয়া নামের রোগ আছে। যেখানে পাকস্থলের কিছু অংশ বুকের দিকে চলে আসে। তাদের মধ্যে বুক জ্বালা করা দেখা যায়। আর নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ আছে যা এই সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে।যেমন এসপিরিন , আইবুপ্রফেন ইত্যাদি।

আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খান। তাহলে কোন ভাবেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধ চেঞ্জ করবেন না। আপনার ডাক্তারকে জানান যে এই ঔষধ গুলো ব্যবহার করার কারণে জ্বালাপোড়া আরো বাড়ছে। ডাক্তারি আপনাকে ওষুধ বদলে দিতে পারে অথবা জ্বালাপোড়ার জন্য অন্য ওষুধ দিতে পারে।

বাসায় বসে যেভাবে এসব অভ্যাস কমাতে পারে। 

আমাদের প্রতিদিনের অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন করলে কিন্তু। আমরা নিজে নিজেই এই সমস্যা কমিয়ে আনতে পারি।

(১) একবারে যদি পেট ভরে খান এই সমস্যা বেশি হয়। 

  • তাই অনেক খাবার একসাথে খাবেন না। সারাদিন ভাগ ভাগ করে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। বেশি খেলে পাকস্থলীটা ভরে ওঠে। খাবার ঢুকলে পাকস্থলী টা প্রসারিত হয় । একবারে অনেক খাবার খেলে পাকস্থলী অনেক ফুলে ওঠে। আর তখন পাকস্থলীতে থাকা এসিড উপরের দিকে উঠে আসতে পারে। আর শুরু হতে পারে বুকের জ্বালাপোড়া।

(২) খাবারের সময় অনিয়ম করবেন না। 

  • সময় মত খাবার না খেলে পাকস্থলীর আরেকটি রোগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।নাম গ্যাস্ট্রাইটিস এই রোগে পাকস্থলীর গায়ে যত ক্ষত দেখা যায় সেগুলো ইনফেকশন হতে পারে। এই রোগ হলে আপনার পেটে জ্বালাপোড়ার মতো ব্যথা হতে পারে।

(৩) অনেকের মাঝে একটা ধারণা আছে। যাদের এই সমস্যা তাদের জন্য দুনিয়ার প্রায় সব খাবারই নিষেধ। এই ধারণাটা কিন্তু ঠিক না। তাহলে সঠিক টা কি। 

  • একেকজনের জন্য একেক ধরনের খাবারে সমস্যা সৃষ্টি করে । যেসব খাবারে আপনার বুক জ্বালাপোড়া করে শুধু সেই সব খাবার এড়িয়ে চলবেন। সেটা হতে পারে মসলা দেওয়া বা অতিরিক্ত তেল দেওয়া খাবার। আপনার কোন খাবারের সমস্যা সেটি আপনার খুঁজে বের করতে হবে।

(৪) রাতের খাবারটা আগে আগেই সেরে ফেলবেন

  • ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৩-৪ ঘন্টা আগে খাবার খেয়ে নিবেন। আপনি যদি এগারোটায় ঘুমাতে যান তাহলে আটটার দিক খাবার খেয়ে নিবেন। এটা কেন করবেন ভর পেতে চিত হয়ে সুতলে , পাকস্থলী থেকে এসিড উপরের দিকে আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

(৫) ঘুমানোর সময় বা বিছানায় শোয়ার সময় ১০ সেন্টিমিটার উঁচু রাখবেন কোমরের চেয়ে। 

  • সেটা পাকস্থলের এসিড উপরের ওটা থেকে বিরত রাখবে। বালিশ দিয়ে উচু করবেন না কারণ এতে শুধু আপনার মাথায় উঁচু হয়। যাদের রাতের বেলায় জ্বালাপোড়া বেশি হয়। তাদের জন্য এই ধাপটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

(৬) আপনার যদি ওজন বেশি হয় তাহলে সেটি কমানোর চেষ্টা করুন। 

  • অতিরিক্ত ওজন অনেক ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে । ডায়াবেটি স হার্টের রোগ অনেক ধরনের সম্পর্ক রয়েছে এই ওজনের সাথে। এবং ওজন কমিয়ে ফেলা এবং সেটাকে ধরে রাখা অনেক উত্তম। আপনার বুক জ্বালাপোড়া সমস্যাটা এটা অনেক ধরনের সমাধান করবে।

(৭) ধূমপান বন্ধ করতে হবে। 

গবেষণায় দেখা গেছে যারা ধূমপান কমিয়ে ফেলে বা বন্ধ করে ফেলে , তাদের এই সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। আর ধূমপানু নানা ধরনের রোগের কারণ। তাই এই অভ্যাসটা পরিত্যাগ করাই ভালো।

এতক্ষণ বললাম জীবনাচরণে কিছু পরিবর্তন আনার কথা। তবে সবার রোগ এমন অবস্থায় থাকবে না। যে শুধু এই পরিবর্তনের সেরে যাবে। ওষুধের সাহায্য দরকার হতে পারে। তবে ঔষধের পাশাপাশি এই ধাপগুলো মেনে চলতে হবে।

কোন কোন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। 

যদি বারবার এই সমস্যা দেখা দেয় প্রতিদিনের কাজ ব্যাঘাত ঘটায়। অথবা 20 দিনের বেশি এই সমস্যা দেখা যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বয়স যদি ৫৫ বা তার বেশি হয়ে থাকে। তখন আপনি চিকিৎসার পরামর্শ নিবেন। আর কিছু লক্ষণের কথা আপনার মাথায় রাখতে হবে এগুলো সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এর ছয়টি লক্ষণ আছে। 

(১) ওজন কমে যাচ্ছে। 

(২) খাবার কিনতে সমস্যা হচ্ছে গলায় আটকে যাচ্ছে। 

(৩) বারবার বমি হচ্ছে। 

(৪) বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত হচ্ছে।

(৫) মনে হচ্ছে পেটের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। 

(৬) আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতায় ভুগছেন ।

এসব লক্ষণ দেখা দেওয়া মানে গুরু তোর কিছু হয়েছে আপনাকে তখন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর যদি পেটে হঠাৎ করে ব্যথা শুরু হয় তাহলে দ্রুত হসপিটালে যেতে হবে। 

শেষ কথা:

বন্ধুগণ আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা গ্যাস্ট্রিক কোন কারনে হয় সেটা জানতে পেরেছেন। এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় জানতে পেরেছেন। আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারাও উপকৃত হবেন। 

বন্ধুগণ আপনারা যদি আর্টিকেল থেকে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আশা করি আর্টিকেলটি আপনারা আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন ধন্যবাদ সবাইকে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

আরো পড়ুন 

মাথা ঘোরা কিসের লক্ষণ 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url