কোন বাদামের উপকারিতা বেশি

বাদামের উপকারিতা

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, নতুন একটি আর্টিকেলে আপনাদেরকে স্বাগতম। আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদেরকে বাদামের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। 

আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেল টুকু আপনারা ভালোভাবে দেখলে আশা করি অনেক কিছু শিখতে পারবেন এবং জানতে পারবেন। আশা করি আজকের আর্টিকেল থেকে আপনার অনেক উপকৃত হবেন। আপনাদের উপকৃত হওয়ায় আমাদের কষ্টের সার্থক।


প্রিয় বন্ধুরা অত্যন্ত সুস্বাদু এবং প্রিয় একটি খাবার হল বাদাম । বাদাম হল ভিটামিন যুক্ত একটি খাবার। বেশিরভাগ মানুষই কিন্তু বাদাম খেতে খুবই পছন্দ করেন। সাধারণত আমাদের দেশে চার ধরনের বাদাম পাওয়া যায়।


। চিনা বাদাম 


২। কাজুবাদাম


৩। কাঠবাদাম


৪। এবং পেস্তা বাদাম 


এগুলো সব বাদামি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয়ে থাকে।

এবং উপকারিতা মোটামুটি একই ধরনের হয়ে থাকে। একটি থেকে আরেকটি বাদামের পুষ্টিগুণ খুব একটা বেশি ডিফারেন্স নেই । তো এই বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন।

যা আমাদের দেহ গঠনে এবং মাংসপেশি বাড়াতে সাহায্য করে। তারপর বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা আমাদের হার গঠনের সহায়তা করে।


বয়স্ক নারী ও পুরুষদের জন্য বাদাম ভীষণ উপকারী। আমাদের দেশে চল্লিশ বছরের পর বেশিরভাগ মানুষেরই কিন্তু অস্থিওপেরেসিস হয় ।

আরে এই অসুখে সাধারণত হার দুর্বল হয়ে যায়।

তো এমন অবস্থায় বাদাম হতে পারে আপনার খুবই কাছের বন্ধু ।


এছাড়াও বাদামের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। যা আমাদের রক্তে লোহিত রক্তকণিকা সাহায্য করে। পাশাপাশি বাদামে থাকা ভিটামিন ই এবং কেরোলিন আমাদের ত্বক উজ্জ্বল ও ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরে জরুরী অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে । বিশেষ করে এমনিওএসিড, ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অসংখ্য উপাদান রয়েছে। যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।


সাম্প্রতিককালে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে নিয়মিত বাদাম খেলে পুরুষের যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায়। সেজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ৩০ গ্রাম হলেও বাদাম রাখা উচিত। পরিমাণটা মোটামুটি এক মুঠোর মত। সেটা যে কোন বাদাম হতে পারে তবে সম্ভব হলে সবগুলো বাদাম মিলে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।


কাঁচা বাদাম খাওয়ার উপকারিতা


বাদাম ভাজলে বাদামে থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেজন্য বেশি উপকারিতা পেতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে কাঁচা বাদাম খেতে হবে। বাড়ন্ত শিশু এবং গর্ভবতী মহিলা এবং মেনু পুত হয়ে গেছে এমন নারীদের জন্য কাঁচা বাদাম ভীষণ উপকারী। কাঁচা বাদাম খাওয়ার আগে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে বাদামের উপরে থাকা সাইট্রাসিক এবং বাদামের মধ্যে থাকা ট্রেনিন টা চলে যাবে ।


কাঠ বাদামের উপকারিতা 


কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পটাশিয়াম। কাঠ বাদামের অনেক উপকারিতা রয়েছে যেমন ।


১। মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে : কাঠ বাদামের সবথেকে বড় গুণ হলো এটি মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। ভিটামিন ই এবং পটাশিয়াম থাকার কারণে মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখে এই কাঠ বাদাম।


২। যৌন শক্তি বাড়ায় : কাঠবাদাম এর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় মনোসেসিয়েটর ফ্যাট আছে।

যার শরীরে উপকারী কোলেস্টোরিয়াল তৈরি করে

সেক্স হরমোন গুলো ঠিকভাবে কাজ করার জন্য এই কোলেস্টেরিয়াল এর প্রয়োজন আছে।


৩। ওজন কমায় : সকালে কাঠ বাদাম খেলে সারাদিন খিদা কম লাগে । এর ফলে ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে প্রোটিন যুক্ত খাবার খেলে সুগার লেভেলও ঠিক থাকবে।


৪। কাজের গতি বাড়ায় : সকালে উঠে কয়েকটি কাঠ বাদাম খেয়ে নিলে শরীর তরতাজা থাকবে

আপনি হবেন আরো কর্মঠ। এলার্জি লেভেল ঠিক রাখতে রোজ কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত।


৫। ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখে: কাঠবাদাম নিয়মিত খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। একই সাথে শরীরের কর্ম ক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়।


চিনা বাদামের উপকারিতা


১। পুরুষদের জন্য চিনা বাদাম খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ প্রায়-পুরুষের ওই একটা সময় এসে যৌন সমস্যা দেখা দেয়। যদি নিয়মিতই চিনা বাদাম খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন।


২। যারা গর্ভবতী নারী রয়েছেন বা মেনুবাত হয়ে গেছে তাদের জন্য এটা অত্যন্ত জরুরি একটি খাবার। কারণে তুই প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে । চীনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকায় এটা হারকে শক্ত করে তোলে।


৩ । চিনা বাদামের ভিটামিন ই এবং বিটা ক্যারোবিন রয়েছে যা চুল ও ত্বককে সুন্দর ভাবে মসৃণ করে রাখে। ত্বকে সহজে বলিরেখা পরতে দেয় না। চিনা বাদামে রয়েছে রয়েছে প্রোটিন যা আমাদের দেহ গঠন মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে থাকে।


৪। চিনা বাদাম নিয়মিত খেলে ক্যান্সারের মতো ভয়ংকর রোগ থেকে বাঁচা যায়। এমনকি হার্টের রোগ ও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে। বাড়ন্ত শিশু-কিশোরদের জন্য এটি খুবই ভালো একটি খাবার।


কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা


১। এন্টিঅক্সিডেন্ট এর ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখে এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়।


২। সকালে প্রোটিন ও ফাইবার সমিদ্ধ হওয়ায় খুদা কমাতে এবং পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। যা ওজন কমার সম্ভাবনা অনেক থাকে।


৩। স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে কাজুবাদাম।


৪। রক্তের শর্করা মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সাহায্য করে কাজুবাদাম।


৫। কাজুবাদাম হাড়ের জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করে।


পেস্তা বাদামের উপকারিতা 


১। পেস্তা বাদাম খাদ্যনালীতে ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে।


২। পেস্তা বাদাম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে।


৩। প্রতিদিন নিয়মিত ৫৬ গ্রাম প্রস্তাব বাদাম খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।


৪। পেস্তা বাদাম হাই প্রোটিন ও অ্যামাইনো এসিটে ভরপুর।


৫। নিয়মিত পেস্তা বাদাম খেলে মন সতেজ থাকে।


নিয়মিত বাদাম খেলে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।

ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। ক্যান্সারের মত ভয়াবহ রোগ দূরে থাকে। পুষ্টির খাদ্যে দূর করে দেয়। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেয়। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

তাই আমরা নিয়মিত বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করব।


বাদামের মধ্যে থাকা ফসফরাস শরীরের মধ্যে প্রবেশ করার পর এমন ভাবে সেটি কাজ করে যার শরীরের সব হার গঠনের জন্য সাহায্য করে।

তার জন্য প্রতিদিন সকালে একমুঠো করে বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খেতে হবে সব ধরনের বাদাম একসাথে মিশিয়ে নিলে সেটি ভালো হয়। এতে শরীরের হার শক্ত হবে এবং হাড়ের ক্ষয়ও রোধ হবে।

মানুষের শরীরে বাদামের উপকারিতা 

  • পাওয়ারফুল ব্রেনের জন্য বাদাম হতে পারে আপনার প্রিয় একটি বন্ধু। আমেরিকার গবেষণার মধ্যে দেখা গেছে বাদামের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা মাথার ব্রেন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। তাই আমেরিকাতে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার আগে নিয়ম করে বাদাম খাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে।


  • বাদাম মানুষের পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে দেয়। বাদামের মধ্যে রয়েছে ৩ পয়েন্ট ৫ গ্রাম ফাইবার।৬ গ্রাম প্রোটিন। ১৪ গ্রাম প্যাক এবং তার সাথে সাথে রয়েছেন ম্যাঙ্গানিজ ভিটামিন বি এবং ফসফরাস। এবং তার সাথে সাথে রয়েছেন ম্যাগনেসিয়াম। প্রতিটি উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। একমুঠো বাদাম খেলে শরীরে ১৬১ ক্সিলোরি প্রবেশ করে । সেই জন্য এই খাবারটি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।


  • ব্যাট কোলেস্টেরল কমানোর জন্য। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায় যে অনিয়ন্ত্রণ কোলেস্টেরলের জন্য হার্টের আক্রান্ত হওয়া হার অনেক পরিমাণে বেড়ে গেছে। তাই এই বিষয় নিয়ে সাবধান থাকাটা বিশেষভাবে জরুরী।
  • শরীরে যেন কোন ভাবেই ব্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা না বেড়ে যায় তার জন্য আমাদের গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে রাখতে হবে। আর এই কাজটি ভালোভাবে করে বাদাম। বাদামের মধ্যে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং ব্যাট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এবং তার সাথে সাথে হার্টকে হেলদি রাখতে সাহায্য করে।


  • রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাদামের অনেক বেশি প্রয়োজন হয়ে থাকে। এবং রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাদাম হতে পারে আপনার পরম কাছের বন্ধু। বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম রক্তের উপস্থিত থাকা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। সেই কারণে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদেরকে বলা হয় নিয়মিত বাদাম খাওয়ানোর জন্য। চিকিৎসকেরা বলেন যে এই ডায়াবেটিস রোগের জন্য বাদাম খাওয়া খুবই উপকারী। নিয়মিত বাদাম খেলে ডায়াবেটিস রোগের সম্ভাবনা ২৫ থেকে ৩০% কমে যেতে পারে।


শীতকালে বাদাম খাওয়ার উপকারিতা 


  • অতিরিক্ত শীতের কারণে অনেকেই সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। সেই সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন অল্প কিছু করে বাদাম খান। বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা গিয়েছে বাদামের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। সেই জন্য শীতকালে বাদাম খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাদামে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকে এবং প্রোটিন থাকে। কেননা আমাদের শরীরের দেহকোষ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। দেহকোষ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাদামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।


  • অনেকেই আছেন যারা দুধ খেতে পারেন না। যারা দুধ খেতে পারেন না তারা দুধের পরিবর্তে বাঁধনকে বেছে নিতে পারেন। কারণ বাদামে থাকা পুষ্টিগুলো দুধের অভাবটা পূরণ করে দিবে। এবং শরীরে দেহকোষ বৃদ্ধির জন্য সাহায্য করে থাকবে।


  • রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা জোরদার করতে বাদামের ভূমিকা অনেক বেশি। বাদামে আছে ভিটামিন সি যা শীতে সর্দি কাসির মতো রোগের প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন বাদাম খেলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। এবং শরীর ভেতর থেকে অনেক শক্তি পায়। যা আপনার শরীরে থাকা বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

সতর্কতা 

বন্ধুরা আপনারা বাদাম খেলে অনেক উপকৃত হবেন কিন্তু সেটি যদি পরিমান ছাড়া অতিরিক্ত খেয়ে থাকেন তাহলে কিন্তু শরীরের জন্য অনেক সমস্যা সৃষ্টি করবে। সেজন্য একটা জিনিস সবসময় মাথায় রাখবেন কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া কিন্তু ভালো না। আপনারা বাদাম এক মুঠের বেশি খাবেন না। পারলে সবগুলো মিলিয়ে এক মুড খাবেন। যদি আপনি একমত এক মুঠ করে সবগুলোই খান তাহলে আপনার শরীরে অনেক সমস্যা দেখা দিবে। সেই জন্য মনে রাখতে হবে বেশি যেন না হয়ে যায়।

শেষ কথা :

বন্ধুরা আশা করি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা অনেক উপকৃত হয়েছেন। বাদাম খেলে শরীরের কি কি উপকার হয় সেটি জানতে পেরেছেন।

আর বন্ধুরা যদি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ সবাইকে।

আরো পড়ুন

কিসমিসের উপকারিতা




Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url